IOI ২০১৪ - উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং প্রথম দিনের প্রতিযোগিতা

হাসনাইন হেইকেল জামি | জুলাই ১৫, ২০১৪
আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড ২০১৪ তে বাংলাদেশ দলের সাথে তাইওয়ান গেছেন দলনেতা হাসনাইন হেইকেল জামি। তার অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রতিদিন Progক্রিয়া তে লিখবেন তিনি।

IOI 2014

IOI 2014 এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান। ফটো কার্টেসি - IOI 2014 ফেসবুক পেইজ।



আজকে (১৫ই জুলাই) ছিল আই ও আই এর প্রথম দিনের প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা শুরু হয় সকাল ৯টায়। আশা করি লাইভ র‍্যাঙ্কলিস্ট সবাই দেখেছে। সত্যি বলতে আমরা আরও একটু ভাল আশা করেছিলাম। তবে আশা করছি, দ্বিতীয় দিনের প্রতিযোগিতায় ভাল করে বাংলাদেশ ভাল একটা ফলাফল নিয়ে দেশে ফিরতে পারবে।

যারা জানেন না, তাদের জন্য বলছি। আই ও আই তো মোট দুই দিন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিদিন তিনটি করে মোট ছয়টি প্রব্লেম দেওয়া হয় সমাধানের জন্য। প্রতিটি প্রব্লেমের মান ১০০। এই প্রব্লেমগুলোর সমাধান করার জন্য সি, সি++ অথবা প্যাসকেল ভাষা ব্যবহার করে প্রোগ্রাম লিখতে হয়। যে সমস্যাগুলো দেওয়া হয়, তা সমাধান করা অনেক কম্পিউটার বিজ্ঞানের ভার্সিটি পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্যও অনেক কষ্টসাধ্য।

দুইদিনের এই প্রতিযোগিতা শেষে, মোট শিক্ষার্থীর অর্ধেক পাবে ব্রোঞ্জ, এক চতুর্থাংশ পাবে সিলভার এবং এক দ্বাদশাংশ পাবে গোল্ড মেডেল। ১ম দিনের প্রতিযোগিতা শেষে বৃষ্টি আছে ব্রোঞ্জ পাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সীমার ভিতরে। বাকিরা সামান্য বাইরে। আশা করছি দ্বিতীয় দিনে সবাই ভাল করে আমাদের জন্য অনেক গুলো পদক নিয়ে আসবে।

কন্টেস্ট থেকে বের হওয়ার পর কথা বলে জানা গেল, তিনটা প্রব্লেমের জন্য সলিউশনই কন্টেস্ট্যান্টদের মাথায় ছিল। লাবিব এবং হাছিব আসল সলিউশনের খুব কাছাকাছি ছিল। তন্ময় তার কোডে টাইপিং মিস্টেকের কারনে আরো ৪২ পয়েন্ট মিস করেছে। আর বৃষ্টি তার বি এর ১০০ এর সলিউশনের পিছনে অনেক বেশি টাইম নষ্ট করে ফেলায় বাকি প্রব্লেমগুলো থেকে বেশি পয়েন্ট আনতে পারেনি।

এর আগে গতকালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি ছিল বেশ প্রাণবন্ত। যদিও আগের রাতের ফুটবল ফাইনালের জের তখনো ছিল। এবং আমি আর কায়কোবাদ স্যার প্রায় সারাদিন ঘুম ঘুম চোখ নিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের ফাঁকেও কয়েকবার আমার চোখ লেগে গিয়েছিল। প্রথমবার উঠে দেখি, আই ও আই এর প্রেসিডেন্টের বক্তব্য অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেইটা কিছুদূর দেখে, আবার ঘুম। এরপর উঠে দেখি চাইনিজদের নিজস্ব ড্রাগন ড্যান্স অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এরপরে আবার তন্ময়ের ধাক্কায় উঠে দেখি আই ও আই তে আসা টিম গুলোর পরিচিতি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশের নাম বলা মাত্রই আমরা ছয় জন উঠে দাঁড়িয়ে চারপাশে তাকিয়ে হাত নাড়লাম। বেশ কিছু দল এই পরিচিতি পর্বে বেশ চমকে দিয়েছিল। মেক্সিকান টিমের সবার মাথায় ছিল তাদের ঐতিহ্যবাহী সমব্রেরো হ্যাট। এইদিকে ক্রোয়েশিয়া দল তাদের পতাকার মত দেখতে টুপি আশে পাশে ছুড়ে দিয়েও সবাইর দৃষ্টি আকর্ষন করে। মজার ব্যাপার হচ্ছে। তাদের ছুড়ে দেওয়া টুপির অর্ধেকেরও বেশি পায় বাংলাদেশের দলের বিভিন্ন সদস্য। অনুষ্ঠানের শেষ হও ন্যাশনাল তাইওয়ান নরমাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্কেস্ট্রা দলের বিখ্যাত “সাউন্ড অফ মিউজিক” এর পরিবেশনার মাধ্যমে।

আপাতত এইখানেই শেষ করছি। পরে আবার লিখব আই ও আই ও তাইওয়ান নিয়ে। আজকের মত এইখানেই বিদায়।


হাসনাইন হেইকেল জামি

হাসনাইন হেইকেল জামি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষক এবং একাধিক ন্যাশনাল প্রোগ্রামিং কন্টেস্টের চ্যাম্পিয়ন। বাংলাদেশ ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামিং টিমের কোচ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।