Progক্রিয়া শুরু করার একটা বড় উদ্দেশ্য ছিলো, আমাদের আগের প্রজন্ম আমাদের জন্য যে চমৎকার প্রোগ্রামিং কন্টেস্টের সংস্কৃতি রেখে গেছে সেটা আমাদের পরের প্রজন্মের কাছে পৌছে দেয়া।
আমাদের দেশে সাধারণত সবার প্রোগ্রামিং এর সাথে পরিচয় হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরু করার পর। এবং সেটাও হয় খুব অল্প কিছু ভাগ্যবান মানুষজনের যারা কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়ার সুযোগ পায়। এর পরের ব্যস্ততাময় চার বছর আসলে খুব কম সময় নিজেকে বিশ্বসেরা প্রোগ্রামারদের একজন হিসেবে তৈরী করার জন্য। সেজন্য আমরা অনেকদিন থেকে উদ্যোগ নিচ্ছিলাম স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রোগ্রামিং এর সাথে পরিচিতি ঘটানোর, ওদের সামনে একটা কম্পিউটার বিজ্ঞানের একটা বিশাল বড় জগত খুলে দেয়ার। এবং সেটা আমরা শুরু করি অক্টোবর ৬ তারিখে ঢাকা কলেজে Progক্রিয়ার প্রথম স্কুল মিট-আপ আয়োজন করার মাধ্যমে।
দুপুর দুটা বিশ মিনিটে ঢাকা কলেজের লেকচার গ্যালারির পিনপতন নিরবতার মধ্যে লাবিব রশিদ তার সামনে বসে থাকা উৎসুক মন্ত্রমুগ্ধের মুখগুলোকে বলছিলো আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াডে তার অংশ নেবার গল্প। আন্তর্জাতিক ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড কম্পিউটার বিজ্ঞানের জন্য স্কুল-কলেজ লেভেলের সবচে’ বড় প্রতিযোগীতাগুলোর একটা। তারপর শাফায়েত আশরাফ আরো বিস্তারিত বললো ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড কি, কেন, কারা অংশ নেয়, বাংলাদেশের ইনফরমেটিক্স অলিম্পিয়াড কখন হয়, কিভাবে প্রস্তুতি এবং অংশ নিতে হয়।
শুধু প্রোগ্রামিং, কম্পিউটার বিজ্ঞান বা অলিম্পিয়াড নিয়েই কথা বলে আমরা শেষ করতে চাইনি। আমাদের যারা অডিয়েন্স, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা, ওদের কাছ থেকেও শুনতে চেয়েছি। আমরা ওদের সাথে কথা বলেছি অ্যালগরিদমিক প্রবলেম নিয়ে। প্রোগ্রামিং নিয়ে কোন পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা থামায়নি তাদেরকে সত্যিকারের প্রোগ্রামারদের মতো করে ভাবতে এবং তাদের আন্তরিক আগ্রহ আমাদের সমস্ত প্রয়াসকে ভীষণভাবে আশান্বিত করেছে।
আমরা তাদের সাথে আরো কথা বলেছি ঢাকা কলেজের প্রোগ্রামিং ঐতিহ্য নিয়ে। ACM ICPC তে বাংলাদেশের সেরা পারফরমেন্স ছিলো ২০০০ সালে পুরো পৃথিবীর সেরা দলগুলোর মধ্যে ১১তম স্থান অর্জন করা। সেই টিমের সদস্য এবং বর্তমানে মাইক্রোসফটের প্রিন্সিপাল ডেভেলপমেন্ট লীড মুনিরুল আবেদিন পাপ্পানা ছিলেন ঢাকা কলেজের ছাত্র। টপকোডারে বাংলাদেশের প্রথম রেড কোডার, ACM ICPC ওয়ার্ল্ড ফাইনালিস্ট এবং বর্তমানে ইউনিভার্সিটি অফ সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার কোচ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদও ছিলেন ঢাকা কলেজের ছাত্র। তাদের কথা বলার সময় ঢাকা কলেজের বর্তমান ছাত্রদের মুখে আলোর দ্যূতি লক্ষ্য না করাটা প্রায় অসম্ভব ছিল।
Progক্রিয়ার পক্ষ থেকে অনেক ধন্যবাদ জানাই সাদমান প্রতীককে, এই মিট-আপ এর অনুমতি নেয়া এবং গ্যালারির ব্যবস্থা করার জন্য। তা ছাড়া মিট-আপের পুরো সময় আমাদের সাহায্য করার জন্য ধন্যবাদ প্রসেনজিত বিশ্বাস এবং নিসর্গ নিলয়কে। এছাড়া অসংখ্য ধন্যবাদ ঢাকা কলেজ কম্পিউটার সোসাইটিকে তাদের চমৎকার আয়োজনের জন্য।